গতকাল জুলাই বিপ্লবকে অপমান করার পর আজকে নিজেই অপমানিত হয়ে মাঠ ছাড়লেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ম্যাচের আগের দিন প্রেস কনফারেন্সে বসে তিনি যখন জুলাই বিপ্লবের সহস্রাধিক শহীদকে অপমান করে কথা বলছিলেন, তখন কি তিনি জানতেন পরদিন তাকে ভরা মাঠে অপমানিত হতে হবে? সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরের প্রথম টেস্টে দল যখন চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে, সেই মুহূর্তে ৭ বলে মাত্র সাত রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন বাংলাদেশ দলের কথিত এই অধিনায়ক। যে ব্যক্তি বিপদে পড়া দলকে আরো বিপদে ফেলে মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যায়, তার মুখে নৈতিকতার কথা একেবারেই বেমানান।
উল্লেখ্য, গতকাল প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকরা সাকিবের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি তার পক্ষ নিয়ে বলেছিলেন— সাকিব আন্দোলনের পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন নাই তো কী হয়েছে! ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেই যদি সবকিছু সমাধান হয়ে যায় তাহলে আমিও প্রতিদিন একটা করে স্ট্যাটাস দিব। এই কথা বলে তিনি চারিদিকে তাকিয়ে যেই কটাক্ষের হাসি হেসেছেন, সেই হাসি আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার হৃদয়ে আঘাত হেনেছে। পাবলিক সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে কথা বলা যে কত বড় অপরাধ, সেটা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাবেন নাজমুল হোসেন শান্ত, যিনি পরিবেশকে অশান্ত করার পায়তারা করছেন। আজকে মাত্র সাত রানে আউট হওয়ার পর তাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ট্রলের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্যই মূলত শান্ত তাড়াতাড়ি আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে চলে গেছেন।
ক্রীড়া বিশ্লেষকরা বলছেন– শান্ত কিসের ভিত্তিতে জাতীয় দলে চান্স পেয়েছেন সেটা অনেকের কাছেই বোধগম্য নয়। তার মত জিরো পারফরমেন্সের লোকদের যেখানে দলে টিকে থাকাই কষ্ট, সেখানে তিনি কোন রহস্যময় শক্তিতে আওয়ামী লীগের আমল থেকে দলের অধিনায়ক, সেটা খতিয়ে দেখার দাবি জানানো হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। তার কোন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল কিনা সেটাও অনুসন্ধানের দাবি উঠেছে। কারণ শুধু গতকালকের প্রেস কনফারেন্স নয়, এর আগেও তিনি সাকিবের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন। পাঁচ আগস্ট বিপ্লবের ২০ দিন পর গত আগস্টের ২৬ তারিখ তিনি সাকিবের পক্ষ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বড়সড় একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। সেই পোস্ট দিয়ে অবশ্য কমেন্টবক্সে ছাত্র জনতার গালমন্দ ছাড়া তার কপালে আর কিছু জোটে নাই।
নাজমুল হোসেন শান্ত জাতীয় দলের অধিনায়ক হয়ে জুলাই আগস্টের বিপ্লবকে কেন উপহাস করলেন, সে বিষয়ে তাকে জবাবদিহিতা আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন আন্দোলনকারী এবং ক্রিকেটপ্রেমী ছাত্র জনতা। একই সাথে সাকিবকে দেশে আনার দাবিতে যেসব কথিত সাকিবভক্ত দুদিন পরপর মিরপুরে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তাদেরকেও গণপিটুনি দিয়ে প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।