ভারতের আগরতলায় রাজনৈতিক সমাবেশের ষড়যন্ত্র করছে আওয়ামী লীগ এবং সেখান থেকে প্রবাসী সরকার গঠনের জন্য চলছে ঘৃণ্য পরিকল্পনা। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দুই সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ এবং হাসানাত আব্দুল্লাহর সূত্রে বিষয়টি নিয়ে বিবিসি বাংলা বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে হাসানাত আব্দুল্লাহ এবং নোয়াখালীতে অনুষ্ঠিত আরেকটি সমাবেশ থেকে আবদুল হান্নান মাসুদ চাঞ্চল্যকর এই কথা প্রকাশ করেছেন। সূত্র মতে– আওয়ামী লীগের যেসব পলাতক নেতাকর্মী ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে, তারা সবাই আগরতলায় সমবেত হওয়ার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশের পূর্ব দিকে অবস্থিত কুমিল্লার পার্শ্ববর্তী ভারতীয় রাজ্য ত্রিপুরায় এখন বিজেপি শাসন চলছে। তাদের ছত্রছায়ায় সেখানে অনুষ্ঠিতব্য আওয়ামী লীগের সমাবেশে শেখ হাসিনা নিজে বক্তব্য রাখতে পারেন মর্মে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন— তার মা আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। কাজেই এখনো শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী। কয়েকদিন আগে শেখ হাসিনার নিয়োগকৃত বর্তমান রাষ্ট্রপতি অনেকটা একই সুরে জানিয়েছেন যে— শেখ হাসিনার কোন পদত্যাগপত্র তার কাছে নেই। মূলত এই ধরনের অজুহাতের উপর ভিত্তি করে হাসিনাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ধরে নিয়ে আওয়ামী লীগ ভারতে একটি প্রবাসী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। সূত্র বলছে, আগরতলায় সেই সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগ প্রবাসী সরকার গঠন করবে। এরপর শেখ হাসিনা ভারত সরকারের কাছ থেকে ট্রাভেল পাস নিয়ে বিভিন্ন দেশে সফর করবেন তার প্রবাসী সরকারের পক্ষে জনমত গঠনের জন্য।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেছেন, গত শনিবার পলাতক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কুমিল্লা সীমান্তে একটা প্রস্তুতিমূলক মিটিং করতে চেয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে পরবর্তীতে সেই মিটিং তারা করতে পারেনি। অর্থাৎ ভারতে পালিয়ে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মোটেই বসে নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে খোদ ভারতীয় সরকারের সহযোগিতায় তারা বাংলাদেশ বিরোধী বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
আগরতলায় আওয়ামী লীগের সমাবেশের সম্ভাবনাকে যদিও ভারতের সরকারি তরফ থেকে নাকচ করা হয়েছে, তবে ভারতে যে অজস্র অগণিত আওয়ামী নেতাকর্মী জড়ো হয়েছেন এবং সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন, তাতে কোন সন্দেহ নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ভারত যেসব সুবিধা পেয়েছে, নতুন সরকারের কাছ থেকে তাদের সেসব সুবিধা পাওয়ার আশা নেই। এ কারণেই ভারত তার মাটিতে পলাতক আওয়ামী লীগের সর্বস্তরে নেতাকর্মীকে আশ্রয় দিয়েছে, যাতে তারা সেখান থেকে সংগঠিত হয়ে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার প্রস্তুতি নিতে পারে। আওয়ামী লীগের মতো পতিত স্বৈরাচার যদি ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করে, তাহলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মানুষ ভারতের প্রতি আরো বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে, যা প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের নিজের জন্যই ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে।