ছাগলের তৃতীয় সন্তানের মত লাফাতে থাকা এই ব্যক্তি ভারতীয় একটি টেলিভিশনের সাংবাদিক। যাদের কাজই হচ্ছে বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়ানো। বাংলার ছাত্র-জনতা দেড় দশক ধরে মানুষের ঘাড়ে চেপে থাকা নিষ্ঠুর স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়ে যে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে, তাতে বিশ্বের প্রায় সবগুলো দেশ বাহবা দিলেও ব্যতিক্রম শুধ বন্ধুদেশ ভারতের মিডিয়াগুলোর ক্ষেত্রে। বাংলাদেশের জনগণের এই অভাবনীয় সাফল্যের ব্যাপারে একের পর এক মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ আর বাজে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে নিজেদের টিআরপি বাড়ানোই যেন তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
রিপাবলিক বাংলা এবং টিভি নাইনের মত শীর্ষ বেশকিছু ভারতীয় মিডিয়ার নিউজ ঘেটে দেখা গেছে, ভারতেই সংঘটিত হওয়া বিভিন্ন ঘটনাকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হিসেবে দেখানো হচ্ছে । ক্রিকেটার এবং অবৈধ সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তাজার বাড়িতে আগুন দেয়ার দৃশ্যকে হিন্দু ক্রিকেটার লিটন দাসের বাড়ি হিসেবে প্রচার করে রীতিমত তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এমনকি গণভবন থেকে উদ্ধার হওয়া মহিলাদের বিশেষ কাপড়ের ছবিকে কোন এক হিন্দু নারীর ধর্ষণের প্রমাণ হিসেবে পেশ করেছে। সবমিলিয়ে দেখা যাচ্ছে— ব্যাঙের ছাতার মত ভারতজুড়ে গজিয়ে ওঠা মিডিয়াগুলো বাংলাদেশের বিপ্লবকে কলুষিত করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে।
শুধু জাতীয় চ্যানেল নয়, টুইটারে সাধারণ ভারতীয় হিন্দুরাও গুজব সেলের সৈনিক হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের বিভিন্ন জায়গার পুরনো ভাঙা মন্দিরের দৃশ্যকে এখনকার ঘটনা হিসেবে প্রচার করছে। এরপর যখন বাংলাদেশী হিন্দু নেতারা এসব অপপ্রচারকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিলেন, এবং মাদরাসার ছেলেরা রাত জেগে মন্দিরগুলো পাহারা দিতে লাগলো, তখন তারা প্রচার করলো যে, মুসলিম জঙ্গিরা মন্দিরগুলো দখল করে গেটে পাহারা বসিয়েছে। ভারতীয় চ্যানেলগুলো যেমন বিভিন্ন ভুয়া সংবাদ দিয়ে তাদের দেশের মানুষকে বোকা বানায়, তারা ভেবেছিল বাংলাদেশের মানুষকেও সস্তা প্রোপাগাণ্ডা চালিয়ে বোকা বানানো যাবে। কিন্তু ইতোমধ্যে বাংলাদেশী মেধাবী তরুণেরা তাদের সমস্ত প্রোপাগাণ্ডাকে ভুয়া বলে প্রমাণ করে দিয়েছে।
যেই লিটন দাসের বাড়ি পোড়ানো হয়েছে বলে ভারতীয় মিডিয়া তোলপাড় সৃষ্টি করেছে, সেই লিটন দাস পুরো ঘটনাকে মিথ্যা ঘোষণা করে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে হিন্দু মুসলিম কোন ভেদাভেদ নেই। এমনকি কলকাতার পুলিশ ফেসবুকে বিবৃতি দিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার প্রোপাগাণ্ডার ব্যাপারে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে খোদ ভারতের মধ্যেই সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয়, সেখানে ভারতীয় মিডিয়া মুখে কুলুপ এটে থাকে। আর এখন বাংলাদেশের ব্যাপারে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা চালিয়ে ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে নস্যাৎ করার পায়তারা চালাচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় মিডিয়া ভুলে গেছে, বাংলাদেশ এখন অনেক সচেতন। এখানে সস্তা প্রোপাগাণ্ডার কোন মার্কেট নেই।