শেখ মুজিবের হাতে প্রতিষ্ঠিত নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ যুগ যুগ ধরে যেই অপকর্ম করে এসেছে, আন্তর্জাতিক কোন মাফিয়া গ্যাংয়ের পক্ষেও এত প্রকারের অপকর্মে লিপ্ত হওয়া অসম্ভব। খুন, হত্যা, ধর্ষণ, গরু চুরি, মুরগি চুরি, এমনকি প্রবাসীর স্ত্রীর খাটের নিচ থেকেও ধরা পড়ছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। আজকে আমরা ছাত্রলীগের কুখ্যাত কয়েকটি ঐতিহাসিক অপকর্মের কথা তুলে ধরবো, যা শুনলে আপনার মনে হবে যে এই সংগঠনটিকে আরো ৩০ বছর আগেই নিষিদ্ধ করা দরকার ছিল।
১. ছাত্রলীগের অপরাধ কর্মের মধ্যে শুরুতেই আসে সেঞ্চুরি মানিকের নাম। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা রান করেছেন চুরি করতে না পারলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে ফেলেছিলেন এবং 100 তম মেয়েকে ধর্ষণের পর মিষ্টি বিতরণ করে সেই সেঞ্চুরি উদযাপন করেছিলেন। যেই ছাত্র সংগঠনের সদস্য একাই একশটা ধর্ষণ করে মিষ্টি বিতরণ করতে পারে, তাদের নিষিদ্ধ করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের জন্য অন্য কোন কারণের প্রয়োজন নেই।
২. বাংলাদেশের হিন্দুরা আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংক হিসেবে কাজ করলেও তাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি এই আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগই করেছে। ২০১২ সালের কুখ্যাত বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল। বিএনপি সন্দেহে বিশ্বজিৎ নামে এক হিন্দু দর্জিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মীরা সামনেই প্রকাশ্যে দিবালোকে অজস্র ক্যামেরার সামনেই চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় ছাত্রলীগের আটজনের ফাসির রায় হলেও আওয়ামী অনুগত হাইকোর্ট সেখান থেকে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে দেয়। বাকি দুজনের মৃত্যুদণ্ডও আজ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি।
৩. আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড
ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং ছাত্রলীগের প্রসঙ্গে সবচেয়ে আলোচিত নাম আবরার ফাহাদ। ভারত বিরোধী স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে মেধাবী এই বুয়েট শিক্ষার্থীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় হত্যা করেছে তারই সহপাঠী ছাত্রলীগ কর্মীরা। আবরার হত্যাকাণ্ডকে ছাত্রলীগের ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্ক মনে করা হয়। সেই ঘটনার মধ্য দিয়ে শহীদ আবরার ফাহাদ বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্য বিরোধী আন্দোলনের অমর প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়কে ক্যান্টনম্যান্টে পরিণত
ছাত্রলীগ এদেশের সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটা করেছে সেটা হচ্ছে তারা এদেশের উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। পড়ালেখার পরিবেশ ধ্বংস করে প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়কে তারা ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছিল। হলদখল, চাদাবাজি, সিটবাণিজ্য, পতিতাবৃত্তি, মেয়েদেরকে আওয়ামী নেতাদের কাছে পাঠানোর মত জঘন্য সব অপরাধ করেও তারা বুক উচিয়ে চলতো। এবং যারা ছাত্রলীগের সাথে একাত্ম হয়ে সবচেয়ে বেশি হিংস্রতা দেখাতো, তাদের জন্য পুলিশের এসআই থেকে শুরু করে বিভিন্ন চাকুরির বন্দোবস্ত করা হতো। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার এসে পুলিশর এমন অজস্র এসআই নিয়োগ বাতিল করেছে, যারা সবাই ছাত্রলীগের দাগী আসামী হিসেবে পরিচিত ছিল।
মোটকথা আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ছাত্রলীগের গলার রশি খুলে কুকুরের মত সবার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছিল। তাদের চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের মধ্যে চাপে পড়ে দুই একটার যা ফাসির রায় হয়েছিল, ক্ষমার সাগর আওয়ামী রাষ্ট্রপতিরা তাদের প্রাণভিক্ষা দিয়ে দিতো। এরা বের হয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে মানুষ হত্যা করতো। এ কারণে মানুষ কুকুরকেও এতটা ঘৃণা করে না, যতটা ঘৃণা ছাত্রলীগকে করে থাকে। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধের পর এবার তাদের নামের আগে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন কথাটা উল্লেখ করার দাবি জানানো হয়েছে। এদেরকে পথেঘাটে যেখানেই পাওয়া যাবে, গণধোলাই দিয়ে পুলিশ বা সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে— এখন এমন প্রচারণাই চালানো হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।