ফুটবলের বিখ্যাত আরবীয় ধারাভাষ্যকার খলীল আল বালুসীর ধারাভাষ্য শোনেননি এমন মানুষ খুব কমই আছে। সম্প্রতি ফুটবলের এক ধারাভাষ্যে তিনি ফিলিস্তিনের গাজার শিশুদের নিয়ে এমন কিছু কথা বলেছেন, যা সারাবিশ্বে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইউক্রেনের ক্লাব শাখতার দোনেৎস্ক এবং বার্সেলনার মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেসময় ইউক্রেনের এই ক্লাব তাদের কিছু শিশুকে ম্যাচটি দেখার সুযোগ করে দেয়। ম্যাচের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এফসি শাখতারের বল বার্সেলোনার জালে জড়ালে ইউক্রেনীয় শিশুরা আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে।
শিশুদের এমন আনন্দঘন মুহুর্ত দেখে ধারাভাষ্যকার খলীল বালুসীর স্মৃতিতে যেন ফিলিস্তিনী শিশুদের বিধ্বস্ত চেহারা ভেসে উঠে। তখন তিনি সেই বাচ্চাদের লক্ষ করে বলে ওঠেনঃ
ফুটবলের ধারাভাষ্য এমনিতেই টান টান উত্তেজনার একটা জিনিস। বিশেষ করে খলীল বালুসি তার চমকপ্রদ কণ্ঠে ফুটবলের আরবি ধারাভাষ্যকে ভিন্নরকম উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। চ্যাম্পিয়ন লীগ থেকে শুরু করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, স্প্যানিশ লা লিগা— ক্যামেরার আড়াল থেকে সর্বত্রই শোনা যায় খলীল বালুসির কণ্ঠস্বর। সেই কণ্ঠে যখন ফিলিস্তিনি শিশুদের অধিকারের কথা, তাদের জীবন ও চাহিদার কথা উচ্চারিত হয়, তখন এর চাইতে শ্রুতি মধুর আর কিছু হতে পারে না।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের নিরীহ নারী ও শিশুদের উপর ইসরাইলী বাহিনীর বর্বরতা দেখেও যখন প্রভাবশালী মুসলিম নেতারা মুখে কুলুপ এঁটে আছে, তখন টিভি সেটের সামনে বসা অজস্র অগণিত দর্শকের সামনে ফিলিস্তিনের স্মরণে খলীল আল বালুসীর এমন সাহসী ধারাভাষ্য মুসলিম বিশ্বের হৃদয় জয় করে নিয়েছে। আরব শায়খরা তাদের প্রতিবেশী ভাইদের কথা ভুলে গেলেও ভোলেননি খলীল বালুসি। তিনি ফুটবলপ্রেমী মানুষের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেনের শিশুদের যেমন ফুটবল খেলার অধিকার আছে, ইউরোপের শিশুদের যেমন আনন্দ করার অধিকার আছে, গাজার শিশুদেরও সমান অধিকার আছে এই পৃথিবীর বুকে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার। নিজের অবস্থান থেকে সেই অধিকারের কথা বলতে পারাটাই সবচেয়ে বড় সাহসিকতা, যা করে দেখিয়েছেন নন্দিত ধারাভাষ্যকার খলীল আল বালুসি।
আরিফুর রহমান আযাদ,
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এমবিএ টাইমস