সাকিব আল হাসানের দেশে আসা না আসা নিয়ে মিরপুর সহ সারা দেশে চলছে টানটান উত্তেজনা। আওয়ামী লীগের হালুয়া রুটি খাওয়া সাকিব দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলে বিদায় নিতে চাইলেও তাকে কোনরকম সুযোগ দিতে নারাজ দেশের ক্রিকেট প্রিয় আপামর ছাত্রজনতা। তাদের বক্তব্য : আওয়ামী লীগের হালুয়া রুটি যেহেতু সাকিব খেয়েছেন, অতএব আওয়ামী লীগের অপরাধের দায়ও তাকে নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের আমলে শেখ হাসিনার আঁচলের নিচে লুকিয়ে সাকিব যেসিব কুকীর্তি করে বেড়িয়েছেন, আজকে আমরা তার সেসব কুকীর্তি এক নিউজেই তুলে ধরবো।
আদম পাচার
ফিয়েস্তা নামে একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান সাকিব আল হাসান। আর তার নাম ব্যবহার করেই এই কোম্পানি বিভিন্ন দেশে মানব পাচার করে থাকে। সর্বশেষ জাপানে 35 জনকে অবৈধভাবে পাচার করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছিল সাকিবের এই প্রতিষ্ঠান।
শেয়ার বাজার কারসাজি
দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের শুভেচ্ছা দূত বানানো হয়েছিল সাকিব আল হাসানকে; যিনি নিজেই আগাগোড়া একজন দুর্নীতিবাজ। শেয়ার বাজারে 6 টি প্রতিষ্ঠানের নামে 104 কোটি টাকা শেয়ার কারসাজি করে ধরা পড়েছিলেন। এই ঘটনায় ৫০ লাখ টাকা জরিমানার পাশাপাশি দুদকের শুভেচ্ছাদূতের পদ থেকেও সাকিবকে বহিস্কার করা হয়।
বাবা পরিবর্তন
টাকার জন্য নিজের বাবাকেও বিক্রি করতে দ্বিধা করেননি সাকিব আল হাসান। আসল বাবার নাম মাশরুর রেজা হলেও সাকিব তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোল্ডিংসের কাগজপত্রে বাবার নাম লিখেছেন কাজী আব্দুল লতিফ। অর্থাৎ ব্যবসার প্রয়োজনে নিজের বাবাকে পরিবর্তন করতেও সাকিব কোন দ্বিধা করেননি।
অনলাইন জুয়াড়ি
বর্তমান যুবসমাজকে ধ্বংসের অন্যতম হাতিয়ার অনলাইন বিভিন্ন জুয়া বা বেটিং সাইট। ভারতের কুখ্যাত মাহাদেভ বেটিং কেলেঙ্কারিতে উঠে এসেছে সাকিবের বোনের নাম। অর্থাৎ নিজের বোনকে দিয়ে জুয়ার জগতেও পা বাড়িয়েছেন ক্রিকেটের এই ব্যাড বয়। ২০২২ সালে আরেক জুয়া কোম্পানি বেট উইনারের ব্র্যান্ড এম্বাসেডর হয়ে তিনি বিতর্কে জড়িয়েছেন। এছাড়া ম্যাচ ফিক্সিং সংক্রান্ত বিষয়ে সাকিবকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল।
কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের টাকা আত্মসাৎ
সাকিব এবং কাঁকড়া : জগতের সর্ম্পূণ ভিন্ন এই দুটো প্রাণীর মধ্যে কোন যোগসূত্র ছিল না। কিন্তু টাকার লোভে সাকিব কাঁকড়া ব্যবসাতেও পা বাড়িয়েছেন। এরপর সাতক্ষীরার অসহায় কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের টাকা আত্মসাৎ করে সটকে পড়েছেন।
হত্যা মামলার পলাতক আসামীর শোরুম উদ্বোধন
দুবাই প্রবাসী রহস্যজনক চরিত্র আরাভ খান, যিনি হত্যা মামলার পলাতক আসামী, দুবাইয়ে তার শোরুম উদ্বোধন করতে ছুটে গিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সমালোচকরা বলছেন, সাকিবের একটা নির্ধারিত রেট ছিল। সেই রেটের সাথে মিলে গেলেই তিনি যে কোন সময় যে কোন জায়গায় ছুটে যেতেন। এক্ষেত্রে আমন্ত্রণকারী কে বা কোন প্রতিষ্ঠান, সেটা সাকিবের কাছে বিবেচ্য ছিল না। চাহিদার পরিমাণ টাকা পেলেই তিনি চোখ বন্ধ করে ছুটে যেতেন। আরাভ খানের শো রুম উদ্বোধন যার জ্বলন্ত উদাহরণ।
অশ্লীল ইশারা
২০১৪ সালে শ্রীলংকার সাথে ম্যাচে আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান সাকিব। এসময় তার দিকে ক্যামেরা ধরলে নিজের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে লাইভ ক্যামেরায় তিনি অশ্লীল ইশারা করেন। এ ঘটনায় সাকিবকে তিন লাখ টাকা জরিমানা এবং তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
সাকিবের ব্যাপারে আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেছিলেন, আল্লাহ সাকিবকে সবই দিয়েছেন, শুধু নৈতিকতা দেননি। এ কারণেই সাকিব সবসময় অনৈতিক কাজে জড়িয়ে অবৈধভাবে টাকা উপার্জনের ধান্ধা করেছেন, বিনা ভোটে এমপি হয়ে হাজার কোটি টাকা কামাতে চেয়েছেন, যার ফলে আজ তার এই পরিণতি। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে অনেক অর্জন হলেও সাকিব যেহেতু খুনিদের দলে নাম লিখিয়েছেন, ঢাকায় গণহত্যার সময় কানাডায় বসে পিকনিকের ছবি আপলোড করেছেন, তাই সাকিবকে এক বিন্দু ছাড় দিতে নারাজ এদেশের আপামর ছাত্র জনতা। সাকিব যদি বিদায়ী টেস্ট খেলতে মিরপুর স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করেন, তাহলে তিনি অক্ষত শরীর নিয়ে ফিরতে পারবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে।